মঙ্গলবার, ১৯ এপ্রিল, ২০১১

বিশ্ব ব্যাংকের ঋণে লিবিয়া ফেরতদের সহায়তা

ঢাকা (বাংলাটাইমস টুয়েন্টিফোর ডটকম): বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশকে সহজ শর্তে ৪০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার (বাংলাদেশি মূদ্রায় অন্তত ২৯০ কোটি টাকা) ঋণ দেবে। এ অর্থ থেকে লিবিয়া প্রত্যাগত বাংলাদেশি কর্মীর পরিবহন ব্যয় বাবদ আন্তর্জাতিক অভিবাসী সংস্থার (আইওএম) পাওনাও পরিশোধ করা হবে। এ তথ্য জানিয়েছেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন। লিবিয়া থেকে ফিরে আসা ক্ষতিগ্রস্ত বাংলাদেশি কর্মীদের পুনর্বাসন প্রক্রিয়ার জন্য ন্যুনতম ৫০ হাজার টাকা করে সহায়তা দেবে সরকার।

আজ সোমবার সচিবালয়ে শ্রম মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা বলেন। মন্ত্রী পর্যায়ে দু’দিনের রুদ্ধদ্বার বৈঠকে লিবিয়ার শ্রমবাজারসহ আন্তর্জাতিক শ্রমবাজারের প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবেলা এবং অভিবাসীদের বিভিন্ন সমস্যার সমাধানে করণীয় নির্ধারণ করা হবে বলে জানান মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ।
লিবিয়া ফেরৎ ক্ষতিগ্রস্ত বাংলাদেশি অভিবাসীদের পুনর্বাসন প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, এসব শ্রমিকের তালিকা সরকারের কাছে রয়েছে। এদের মধ্যে যারা আবারো বিদেশে যেতে চায়, তাদের বাছাই করে আগামী ছয় মাসের মধ্যেই বিভিন্ন দেশে পাঠানো হবে। এখন দৈনিক এক হাজার ৫০০ কর্মী বিদেশে যাচ্ছে। এক্ষেত্রে লিবিয়া ফেরৎ ব্যক্তিরা অগ্রাধিকার পাবে।
অন্যদের মধ্যে ব্যবসা করতে ইচ্ছুক ব্যক্তিদের প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক থেকে সহজ শর্তে ঋণ দেয়া হবে। এতে সুদের হার হবে মাত্র নয় শতাংশ। এজন্য ওয়েজ আর্নার্স তহবিল থেকে ৯৫ কোটি এবং সরকারি মঞ্জুরি বাবদ পাঁচ কোটি টাকা নিয়ে অচিরেই প্রবাসী কল্যাণ ব্যংকের যাত্রা শুরু হয়েছে। ভবিষ্যতে এ ব্যাংকের কার্যকরি মূলধন ৪০০ কোটি টাকা করা হবে, জানান তিনি।
লিবিয়া থেকে বাংলাদেশি কর্মীদের প্রত্যাবাসন ব্যয় মেটানোর বিষয়ে সমঝোতায় পৌঁছানোর দাবি করে খন্দকার মোশাররফ বলেন, এজন্য জনপ্রতি এক হাজার ২৬০ মার্কিন ডলার করে আইওএম’কে দেওয়া হবে। তবে তারা মাত্র ১০ হাজার কর্মীর পরিবহণ ব্যয় নেবে। বাকী ১৯ হাজারের পরিবহণ ব্যয় তারা নেবে না। সংস্থাটি এ পর্যন্ত ২৯ হাজার কর্মী পরিবহন করেছে।
প্রবাসী কল্যাণ সচিব ড. জাফর আহমেদ খান, জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) মহাপরিচালক খোরশেদ আলম চৌধুরী ও মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব আসাদুল ইসলাম এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
এরআগে বাংলাদেশ সফররত আইওএম’র প্রধান নির্বাহী ও রাষ্ট্রদূত উইলিয়াম লেসি সুইং প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেনের সঙ্গে তার কার্যালয়ে দেখা করেন।
মন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক শেষে বাংলাদেশি কর্মীদের পুনর্বাসন প্রক্রিয়া সম্পর্কে উইলিয়াম লেসি বলেন, আইওএম এখন পর্যন্ত বিভিন্ন দেশের কর্মীদের লিবিয়া থেকে প্রত্যাবাসনকেই গুরুত্ব দিচ্ছে। সেখানে বাংলাদেশের প্রায় ৬০ থেকে ৮০ হাজার কর্মী ছিল। এরমধ্যে ৩৩ হাজার কর্মী ফিরে এসেছে। অন্যদেরও ফেরানোর কাজ চলছে।
এখনো পুনর্বাসনের বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। যদি এমন কোন সিদ্ধান্ত হয়, সেক্ষেত্রে বিশ্বের প্রায় ৪১টি দেশের অন্য কর্মীদের মতো বাংলাদেশি কর্মীরাও পুনর্বাসনের সুযোগ পাবে।
লিবিয়ায় এখনো আটক বাংলাদেশিদের উদ্ধারে পদক্ষেপ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, দেশটিতে এখনো যুদ্ধ চলছে। তাই এখনো তাদের অবস্থান সম্পর্কে আমরা ঠিকমতো কিছুই জানি না। আমাদের সেখানেই কিছুই করার নেই। তবে যারা বিভিন্নভাবে সীমান্ত এলাকার আশ্রয় কেন্দ্রে আসছে, তাদের প্রত্যাবাসনে পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন